ইমাম খাইর, কক্সবাজার :: প্রায় এক বছর গত হলেও হস্তান্তর করতে পারে নি কক্সবাজার জেলা কারাগারের বন্দিদের জন্য নির্মাণাধীন ‘বন্দি ব্যারাক’। বরং বারবার সময় নিচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সঠিক তদারকি করছে না গণপূর্ত বিভাগ। ধারণক্ষমতার আট গুণের বেশি বন্দি নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষকে।
কারাগারে বন্দিদের আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৬ তলা বিশিষ্ট ‘বন্দি ব্যারাক’ নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। আর্থিক ব্যয় ধরা হয় ৫ কোটি টাকা।
২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল কার্যাদেশ পায় চট্টগ্রামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডেল্টা কনস্ট্রাকশন।
২১,৬০৬ বর্গফুট জায়গায় কাজ শুরু করে গণর্পূত বিভাগ।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে ভবনটি হস্তান্তরের কথা।
কিন্তু ঠিকাদার ও গণপূর্তের অবহেলার শিকার সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পটি। গত বছর থেকে অন্তত তিনবার সময় নিয়েও বুঝিয়ে দিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।
তবে, আগামী মার্চ মাসে ভবনটি উদ্বোধন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নির্মাণাধীন ‘বন্দি ব্যারাকে’ থাকবে ১২টি ওয়ার্ড। প্রতি ওয়ার্ডে ৩০০ জন করে রাখা হবে। তবে বর্তমান অবস্থা অনুযায়ী পুরো ৬ তলা ভবনে দেড় হাজার পর্যন্ত বন্দির আবাসন নিশ্চিত করা যাবে। বর্ধিত কারাগার ভবন নির্মাণ হওয়ার ফলে বন্দিদের আবাসন সমস্যার অনেকটা সমাধান হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।
কক্সবাজার জেলা কারাগারে বন্দির ধারণ ক্ষমতা ৫৩০ জন। কিন্তু ধারণ ক্ষমতার প্রায় ৮ গুণ রাখতে হয়। ১৬ ফেব্রুয়ারীর কারা রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের বন্দি সংখ্যা ৪৪৯৫ জন।
কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা মৌজার বাইপাসে ২০০১ সালে ১২.৮৬ একর জমিতে গড়ে তোলা জেলা কারাগারে ৪টি দালান নির্মাণ করা হলেও প্রতি বছরই বাড়ছে কয়েদি ও হাজতির সংখ্যা। ফলে ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনা করে সরকার বন্দিদের সমস্যা লাঘবে জেলা কারাগারে যোগ হচ্ছে আরো ৬’শ জন বন্দি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ভবন। ইতোমধ্যে ভবনের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আগামি মার্চ মাস নাগাদ অবশিষ্ট কাজ শেষ হবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা। তবে কাজের গতি নিয়ে চরম অসন্তোষ রয়েছে জেল সুপারের।
গত বছর জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বছর পেরিয়ে অদ্যাবধি ভবনটি জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করতে পারেনি গণর্পূত বিভাগ।
কারা সুপার মোঃ মোকাম্মেল হোসেন জানান, প্রতিদিনই বাড়ছে বন্দির সংখ্যা। ৫৩০ জনের জায়গায় রয়েছে সাড়ে ৪ হাজারের বেশি। অনেক সময় ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খেতে হয়।
এ বিষয়ে জানতে কক্সবাজার গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে বলেন, প্লেন রড না পাওয়ার কারণে কাজ সম্পন্ন করতে দেরি হচ্ছে। দ্রুত বাকি কাজ সম্পন্ন করে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা চলছে।
এদিকে, কক্সবাজার জেলা কারাগারের জন্য আরো একটি ৩ তলা বিশিষ্ট ভবনের অনুমোদন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুপার মোঃ মোকাম্মেল হোসেন। তবে এটি এখনো টেন্ডার হয়নি।
বন্দিদের আবাসন সমস্যা নিরসনে ৬ তলা বিশিষ্ট ভবনের অবশিষ্ট কাজ দ্রুত শেষ করে হস্তান্তরের দাবী সংশ্লিষ্টদের।
পাঠকের মতামত: